বুধবার, ২৮ মে, ২০১৪

হুমায়ূন আজাদ এর বিখ্যাত উক্তি (দুই)

১। এদেশের মুসলমান এক সময় মুসলমান বাঙালি, তারপর বাঙালি মুসলামান, তারপর বাঙালি হয়েছিলো; এখন আবার তারা বাঙালি থেকে বাঙালি মুসলমান, বাঙালি মুসলমান থেকে মুসলমান বাঙালি, এবং মুসলমান বাঙালি থেকে মুসলমান হচ্ছে। পৌত্রের ঔরষে জন্ম নিচ্ছে পিতামহ।
২। নিন্দুকেরা পুরোপুরি অসৎ হ’তে পারেন না, কিছুটা সততা তাঁদের পেশার জন্যে অপরিহার্য; কিন্তু প্রশংসাকারীদের পেশার জন্য মিথ্যাচারই যথেষ্ট।
৩। বাস্তব কাজ অনেক সহজ অবাস্তব কাজের থেকে ; আট ঘন্টা একটানা শ্রম গাধাও করতে পারে,কিন্তু একটানা এক ঘন্টা স্বপ্ন দেখা রবীন্দ্রনাথের পক্ষেও অসম্ভব।
৪। প্রতিটি সার্থক প্রেমের কবিতা বলতে বোঝায় যে কবি প্রেমিকাকে পায় নি, প্রতিটি ব্যর্থ প্রেমের কবিতা বোঝায় যে কবি প্রেমিকাকে বিয়ে করেছে।
৫। তৃতীয় বিশ্বের নেতা হওয়ার জন্যে দুটি জিনিশ দরকার : বন্দুক ও কবর।
৬। প্রতিটি বিজ্ঞাপনে পণ্যটির থেকে পণ্যাটি অনেক লোভনীয়; তাই ব্যর্থ হচ্ছে বিজ্ঞাপনগুলো।দর্শকেরা পণ্যের থেকে পণ্যাটিকেই কিনতে ও ব্যবহার করতে অধিক আগ্রহ বোধ করে।
৭। কোন দেশের লাঙলের রূপ দেখেই বোঝা যায় ওই দেশের মেয়েরা কেমন নাচে, কবিরা কেমন কবিতা লেখেন, বিজ্ঞানীরা কি আবিষ্কার করেন, আর রাজনীতিকেরা কতোটা চুরি করে।
৮। যারা ধর্মের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেয়, তারা ধার্মিকও নয়, বিজ্ঞানীও নয়। শুরুতেই স্বর্গ থেকে যাকে বিতারিত করা হয়েছিলো, তারা তার বংশধর।
৯। যতোদিন মানুষ অসৎ থাকে, ততোদিন তার কোনো শত্রু থাকে না; কিন্তু যেই সে সৎ হয়ে উঠে,তার শত্রুর অভাব থাকে না।
১০। এদেশে সবাই শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক : দারোগার শোকসংবাদেও লেখা হয়, ‘তিনি শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক ছিলেন’।

হুমায়ূন আজাদ এর বিখ্যাত উক্তি (এক)

১। মানুষ সিংহের প্রশংসা করে, কিন্তু আসলে গাধাকেই পছন্দ করে।
২। পুঁজিবাদের আল্লার নাম টাকা, মসজিদের নাম ব্যাংক।
৩। সুন্দর মনের থেকে সুন্দর শরীর অনেক আকর্ষনীয়। কিন্তু ভন্ডরা বলেন উলটো কথা।
৪। হিন্দুরা মুর্তিপূজারী; মুসলমানেরা ভাবমুর্তিপূজারী। মুর্তিপূজা নির্বুদ্ধিতা; আর ভাবমুর্তিপূজা ভয়াবহ।
৫। ‘মিনিষ্টার’ শব্দের মূল অর্থ ভৃত্য। বাঙলাদেশের মন্ত্রীদের দেখে শব্দটির মূল অর্থই মনে পড়ে।
৬। আমাদের অঞ্চলে সৌন্দর্য অশ্লীল, অসৌন্দর্য শ্লীল। রুপসীর একটু নগ্ন বাহু দেখে ওরা হৈ চৈ করে,কিন্তু পথে পথে ভিখিরিনির উলঙ্গ দেহ দেখে ওরা একটুও বিচলিত হয় না।
৭। শ্রদ্ধা হচ্ছে শক্তিমান কারো সাহায্যে স্বার্থোদ্ধারের বিনিময়ে পরিশোধিত পারিশ্রমিক।
৮। আগে কারো সাথে পরিচয় হ’লে জানতে ইচ্ছে হতো সে কী পাশ? এখন কারো সাথে দেখা হ’লে জানতে ইচ্ছে হয় সে কী ফেল?
৯। ব্যর্থরাই প্রকৃত মানুষ, সফলেরা শয়তান।
১০। পরমাত্মীয়ের মৃত্যুর শোকের মধ্যেও মানুষ কিছুটা সুখ বোধ করে যে সে নিজে বেঁচে আছে।

মঙ্গলবার, ২৭ মে, ২০১৪

খুচরো বচন !! ইউরোপীয় রেনেসাঁ, মার্কসিজম, এক্সিস্টেনসিয়ালিজম এবং নতুন সম্ভাবনা।

মধ্যযুগীয় বর্বরতার কথা আমরা কে’না শুনেছি কিন্তু এই বর্বরচিত অধ্যায়টি কোন সমাজের প্রেক্ষাপটে ঘটেছিল তা সম্পর্কে আমরা আদৌ কনসাস না। মধ্যযুগে আরবে/মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসের দিকে আমরা যদি তাকাই তাহলে, বলতে হবে মুসলিমদের স্বর্ণযুগ ছিল মধ্যযুগ। যে সময়টাতে তারা জ্ঞান বিজ্ঞানে সবচেয়ে বেশি উৎকর্ষতা সাধন করছিল। গির্জার বর্বরতাকে পুঁজি করে মধ্যযুগকে ঢালাও ভাবে বর্বর যুগ বলে, মুসলিমদের উৎকর্ষতাকে ঢাকার অভিপ্রায় ইউরোপীয় বুদ্ধিবিত্তিক সন্ত্রাস ছাড়া আর কিছুই না। গির্জার ক্ষমতায়নের সময়ে মানুষের আত্মার অবদমনে এবং জ্ঞান বিজ্ঞানের ক্রমহ্রাসমান ধারার রুটকে সচল করতে ইউরোপীয় দার্শনিকদের জাগরণ, গির্জার বিরুদ্ধে আন্দোলন, ধর্মের গণ্ডি টপকিয়ে নিজেকে ঈশ্বরের স্থানে উপস্থাপনেই রেনেসাঁর যাত্রা। মধ্যযুগে যখন গীর্যার অর্থ-সম্পদ এবং ক্ষমতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছিল, তখন বিষয়টি গীর্যার নেতৃবৃন্দের মাঝে রাজনৈতিক ও চারিত্রিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত সৃষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল৷ একারণেই খ্রিষ্টিয় পনের শতকে গীর্যার সংস্কার একরকম অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল৷ এই সংস্কারের বিষয়টি গীর্যার অনেক সদস্যও সমর্থন করেছিলেন৷ মধ্যযুগে গীর্যার দ্বন্দ্ব এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছিলো যে, গীর্যা সংস্কারে স্বয়ং গীর্যার বহু কর্মকর্তাও বাধ্য হয়েছিলেন ৷ পঞ্চদশ শতাব্দীর পূর্ব পর্যন্ত ধর্মযাজকদের উৎপাতের পর যখন কিছু রেশনাল বুদ্ধিজীবীদের প্রোটেস্টের দ্বারা ব্যাপকভাবে বৈজ্ঞানিক উৎকর্ষতা সাধিত হতে থাকে, তখন ইউরোপীয়রা ভেবেছিল এইবার বুঝি তাদের মুক্তি এল রেনেসাঁর মাধ্যমে।

 

Blogger news

Blogroll

About